আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩/০৬/২০২৩ ৯:৩৭ এএম

পৃথিবীর দীর্ঘতম সড়ক প্যান আমেরিকান হাইওয়ে। এই সড়ক ১৪টি দেশের মধ্য দিয়ে গেছে। ৩০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত এই সড়কে একটিও বাঁক নেই। এছাড়াও, এই পথের যাত্রা শেষ করতে সময় লাগে কয়েক মাস।

এই মহাসড়ক দিয়ে চলতে চলতে কখন যে ১৪টি দেশ পার করে যাবেন খেয়ালই হবে না। পথটি শুরু হয়েছে উত্তর আমেরিকা থেকে। ১৪টি দেশ পেরিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনায় যায় এই পথ। দৈর্ঘ্যের কারণে এর নাম গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এও রেকর্ড করা হয়েছে।

১৯২৩ সালে নির্মাণ শুরু হয়

প্যান আমেরিকান হাইওয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং দীর্ঘতম রাস্তা। উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকা এই দুই মহাদেশকে যুক্ত করে এই রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছে। রাস্তা তৈরির ধারণাটি প্রথম আসে ১৯২৩ সালে।

এই মহাসড়ক তৈরি করতে শুধু একটি দেশ নয়, অবদান রযেছে ১৪টি দেশের। এই দেশগুলো হলো- কোস্টারিকা পেরু, পানামা, নিকারাগুয়া, মেক্সিকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, হন্ডুরাস, গুয়াতেমালা, বলিভিয়া, এল সালভাদর, কলম্বিয়া, চিলি, কানাডা এবং আর্জেন্টিনা।

এই মহাসড়কটি একদম সোজা। এর কোনও বাঁক নেই। ৩০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত এখানে কোনও বাক কিংবা মোড় নেই। তারপরও এর ওপর দিয়ে হাঁটা অতটা সহজ নয়। দীর্ঘতম এই রাস্তার একটি অংশ এখনও অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। ১১০ কিলোমিটারের এই অংশটিকে বলা হয় ডারিয়েন গ্যাপ। এই স্থানটুকু অপরাধপ্রবণ এলাকা। এখানে মাদক চোরাচালান, চোরাচালানের মতো বহু বেআইনি ঘটনাই ঘটে থাকে।

শুনতে যতটা ভালো লাগছে ব্যাপারটা কিন্তু ততটা সহজ নয়। এর প্রধান কারণ রাস্তাটির দৈর্ঘ্য। এই মহাসড়কের দুই পাশে ঘন বন, তুষারময় এলাকা এবং মরুভূমি দেখতে পাবেন। এত দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার সাধ্য কারও হয় বলে মনে হয় না। এই পথের যাত্রা শেষ করতে কয়েক মাস সময় লাগে।

যাত্রাপথ শেষ হতে কতটা সময় লাগবে তা নির্ভর করে যাত্রীর গাড়ির গতির উপর। একটি হিসেব অনুযায়ী, যদি প্রতিদিন ৫০০ কিলোমিটার পথ যাত্রা করা হয়, তাহলে পুরো রাস্তা পেরোতে ৬০ দিন সময় লাগবে। কালোরস সান্তামারিয়া নামের একজন সাইক্লিস্ট এই পথটি ১১৭ দিনে শেষ করেছেন। গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্-এও তাঁর নাম লেখা আছে।

এই রুটটি বেশ দীর্ঘ। সবচেয়ে বড় কথা হল এই মহাসড়কের কোনও একক রুট নেই। এর একাধিক রুট আছে। যদি এর সমস্ত রুট অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তবে এর দৈর্ঘ্য হবে ৪৮,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। কেউ যদি উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার দুই রাজধানীর মধ্যে ভ্রমণ করেন তাহলে কখনও না কখনও আপনাকে প্যান আমেরিকান হাইওয়েতে যেতেই হবে।

যারা বেড়াতে পছন্দ করেন তাদের একবার অন্তত এই মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করা উচিত। এই মহাসড়ক দিয়ে ভ্রমণ দারুণ রোমাঞ্চকর হয়। এই কারণে চালককে নানা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে অভিজ্ঞ চালক ছাড়া এই পথ দিয়ে গাড়ি চালানো বিপজ্জনক।

এই মহাসড়কটি এতই সুন্দর যে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই মহাসড়কে লং ড্রাইভের জন্য যায়। এর জন্য বেশ কয়েক মাস ধরে প্রস্তুতি নিতে হয় গাড়ি চালকদের। অনেকেই আছেন যারা এই কঠিন পথে বাইকে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। তা কেউ গাড়ি বা বাইক যাতে ইচ্ছে ভ্রমণ করুন না কেন, তার সঙ্গে গাড়ি সারাইয়ের সব ধরনের সরঞ্জাম থাকা দরকার। যাতে গাড়ির চাকা পাংচার হলে বা গাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হলে নিজেই ঠিক করে নিতে পারেন। কারণ এইপথের দূর-দূরান্তে একজনও মেকানিক পাবেন না। তাই নিজেকেই তৈরি থাকতে হবে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে এক সপ্তাহে তিন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বোমাবর্ষণ

মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বৃহস্পতিবার রাখাইন রাজ্যের পাউকতাউ টাউনশিপে বিমান হামলা চালিয়ে কয়েকজন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা ...

মালয়েশিয়ায় জাকির নায়েকের প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

ভারতীয় ইসলামী চিন্তাবিদ ও বক্তা ড. জাকির নায়েকের প্রকাশ্যে বক্তৃতা দেওয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে মালয়েশিয়া। ...